আজ বৃহস্পতিবার, ১৪ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আলোচিত বিএনপি নেতা রাজিব এখন সমালোচনার শীর্ষে

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
নারায়ণগঞ্জ বিএনপির অন্যতম এক আলোচিত নেতা মাসকুল ইসলাম রাজিব (ভিপি রাজিব)। দৈনিক সংবাদচর্চাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা ফটোসেশনের রাজনীতি করে। এমন সংবাদ প্রকাশের পর আলোচিত এই নেতা আরও বেশী সমালোচিত এখন নগরীতে। কারণ তার বক্তব্যে সমর্থন করেছেন বিএনপির অনেক হেভিওয়েট নেতারা।

যার কারনে নগরবাসীর আলোচনার টেবিলে এখন ভিপি রাজিব। তার দেয়া সাক্ষাৎকারের বক্তব্যেকে কেন্দ্র করে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও নারায়ণগঞ্জ বিএনপির অভিভাবক এড. তৈমুর আলম খন্দকার, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মামুন মাহমুদ, মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খান ছাড়াও অনেক নেতাই কোন কথা বলেননি তথা মন্তব্যে করতে চাননি। আবার অনেক নেতার মন্তব্যে মুরব্বীদের উপর কোনও কথা বলা যেতে পারেনা। যার ফলে এখন সমীকরন বলছে ভিপি রাজিবের সাক্ষাৎকারে দেয়া ওই বক্তব্যের কেউ বিরোধিতা করেননি বরং সমর্থন করেছেন। তথা বিএনপির নেতাকর্মীরা শুধুমাত্র ফটোসেশনের রাজনীতিই করেন।

নগরবাসী মনে করেন, ভিপি রাজিবের দেয়া ওই বক্তব্যে সমর্থন করেছেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা। কারণ দলীয় লোক হয়ে রাজিব যে বক্তব্যে দিয়েছেন যা বর্তমানে সত্য রুপে প্রকাশ পেয়েছে। রাজিবের ওই বক্তব্যের মধ্যে থেকে অনেকেরই অনেক কিছু শেখার আছে। ওই বক্তব্যে থেকে তারা যদি কিছু বুঝতে পারে তাহলে অবশ্যই তারা একত্রিত হয়ে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করবে। সত্যিকার অর্থে বিএনপির নেতারা ফটোসেশনের রাজনীতিই করে থাকেন। তা না হলে বিএনপির নেতাকর্মীরা তার কথার বিরোধিতা করতো। তবে দৈনিক সংবাদচর্চায় প্রকাশিত ওই সংবাদের ভিতরে বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতাদের বক্তব্যে আছে। যারা সেখানে বক্তব্যে দিয়েছেন তারা বরাবরের মতোই ভিপি রাজিবের দেয়া বক্তব্যেকে সমর্থন করেছেন। আসলে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির কোন নেতাকর্মীর মধ্যেই যথেষ্ট দম নেই। যার কারণে তারা রাজপথে থেকে আন্দোলন সংগ্রামে বরাবরের মতো সবসময়ই ব্যর্থ। আদৌ তারা তাদের আন্দোলন-সংগ্রামে সফল হতে পারবেন কিনা তাতে এখনও সন্দেহ আছে।

নগরবাসীর মতে, পরপর তিনবার নির্বাচনে ভরাডুবির পর একটি দলের সাংগঠনিক শক্তিতে এমনিতেই বেঘাত ঘটে। তাদের ঘুরে দাড়াতে হলে বর্তমানে দরকার একটি শক্ত নেতৃত্ব। আর ঠিক সেটারই অভাব নারায়ণগঞ্জ বিএনপিতে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়া না পাওয়াকে কেন্দ্র করেই মূলত তাদের নিজেদের মধ্যে কোন্দলের সৃষ্টি হয়েছে। আর সেই কোন্দল ভুলে কবে তারা একত্রে রাজপথে থেকে আন্দোলন করতে পারবে এখন সেটাই দেখার বিষয়। বিশেষ করে গত নির্বাচনে ভরাডুবির পর তাদের অবস্থা এখর খুবই করুণ।

তাদের ঘুরে দাড়াতে এখনও অনেক সময়ের ব্যাপার। কারণ প্রথমে নিজেদের দলীয় কোন্দল শেষ করতে হবে। এরপর রাজপথে ফটোসেশন না করে সত্যিকার আন্দোলন করতে হবে। তথা রাজপথের আন্দোলন কিংবা সংগ্রামের কথা চিন্তা করতে হবে।

বর্তমান নগরীর মানুষের আলোচনায় সমালোচনার শীর্ষে থাকা এই নেতা অর্থ্যাৎ ভিপি রাজিবের কাছে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি দৈনিক সংবাদচর্চাকে বলেন, আমি যখন যা বলি তা সবসময়ই ভেবেচিন্তে বলি। আমি কখনই আমার বক্তব্যে থেকে পিছপা হবোনা। এতে যে যা মনে করতে পারে করুক আমার সমস্যা নেই। আমি বরাবরের মতই গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। আমি সত্যটাকে সবসময়ই বিশ্বাস করি। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে অবশ্যই আন্দোলন সংগ্রামে সফল হতাম। রাজপথে কেউ থাকবে কেউ থাকবে না এমন হলে আন্দোলন সংগ্রামে কখনই সফল হওয়া কারও জন্য সম্ভব নয়। আমি কখনোই আমার দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে কোন্দল সৃষ্টি করার জন্য কথা বলিনা। যা সত্য আমি সবসময়ই তা বলি।

রাজিব আরও বলেন, এতে করে যারা শুধুমাত্র ফটোসেশনের রাজনীতি করে থাকেন তাদের গায়েঁই এ কথা লাগবে। কিন্তু যারা রাজপথে সবসময়ই আন্দোলন সংগ্রাম করে থাকে তাদের তো আর সমস্যা নেই। আর আমার ওই কথাটা বলার মূল কারণ ছিলো আমরা পূর্বে অনেক সময়ই দীর্ঘদিন হরতাল-অবরোধ দিতাম। কিন্তু সেই সংগ্রামে অনেক নেতারাই সাংবাদিকদের ডেকে নিয়ে ৫মিনিটের সংগ্রাম করে পত্রিকা-টিভিতে সংবাদ প্রকাশ করাতো। আর সবাই মনে করতো যে তারা রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন। আসলে এই ফটোসেশনের রাজনীতি বন্ধ করে আমাদের মূলত রাজপথের আন্দোলনে বেশী সক্রিয় হতে হবে। তাহলেই আমরা আমাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছে যাবো।